আওয়ামী সমর্থকদের শেষ ভরসাও ট্রাম্প পরিবারের সাথে প্রফেসর ইউনুসের ছবিতে বিনষ্ট হয়ে গেল

বাংলাদেশের যুব সমাজ এবং সাধারণ মানুষ ঐক্য, ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে। এই ঐতিহাসিক সাফল্য কেবল একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নতুন অনুপ্রেরণার উৎস।”

PostImage

আওয়ামী সমর্থকদের শেষ ভরসাও ট্রাম্প পরিবারের সাথে প্রফেসর ইউনুসের ছবিতে বিনষ্ট হয়ে গেল


নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের সপ্তাহে ২৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প আয়োজিত বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তার কন্যা-কে সম্মান জানান। ট্রাম্প দম্পতির সঙ্গে ইউনূস পরিবারের সেই ছবি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছে।

যারা ভেবেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দিতে পারবেন না—তাদের সেই আশা চূর্ণ করে দেন তিনি। পিক আওয়ারে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের সামনে বাংলায় শক্তিশালী ভাষণে বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা, জুলাই ২০২৪-এর ঐতিহাসিক আন্দোলনের ছাত্র-জনতার অবদান এবং দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের যুব সমাজ এবং সাধারণ মানুষ ঐক্য, ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে। এই ঐতিহাসিক সাফল্য কেবল একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নতুন অনুপ্রেরণার উৎস।”

ইউনূস তাঁর ভাষণে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, তহবিল ঘাটতির কারণে রোহিঙ্গা শিবিরে ন্যূনতম জীবনমান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ইতিমধ্যে সতর্ক করেছে যে, জরুরি নতুন তহবিল না পেলে মাসিক রেশন অর্ধেকে নেমে আসবে—প্রতি জন মাত্র ৬ ডলারে সীমাবদ্ধ হবে। এটি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ক্ষুধা ও অপুষ্টির দিকে ঠেলে দেবে।

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নতুন তহবিলের ব্যবস্থা করতে এবং মিয়ানমারের সরকারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে দ্রুত রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান। একইসাথে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রান্তিককরণের প্রক্রিয়া আর চলতে দেওয়া যাবে না—তাদের নাগরিক অধিকার, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং নিরাপদ স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।

শুধু রোহিঙ্গা নয়, ইউনূস তাঁর ভাষণে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে জটিল সংকট—প্যালেস্টাইন-ইসরায়েল সংঘাতের স্থায়ী সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “এখন সময় এসেছে বিশ্বকে একসাথে কাজ করে একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির রূপরেখা তৈরি করার।”

জাতিসংঘের অধিবেশনে তাঁর এই শক্তিশালী অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন তুলেছে। নিউইয়র্কে উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ও বাংলাভাষাভাষী কূটনীতিকরা ইউনূসের ভাষণকে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধির মাইলফলক হিসেবে দেখছেন। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এই বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে সম্মান ও স্বীকৃতির দরজা খুলে দিল।

সিএসবি নিউজ-এর আরও খবর