হোয়াইট হাউস থেকে আশার আলো, কিন্তু মস্কো থেকে না-বলা
ট্রাম্পের জন্য এটি এক তীব্র ধাক্কা। তিনি এর আগে জোর দিয়ে বলছিলেন যে তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এক অনস্বীকার্য গতি তৈরি করেছে শান্তিচুক্তির দিকে, এমন একটি সংঘাত বন্ধ করতে যা তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, অফিসে প্রবেশের প্রথম দিনেই শেষ করবেন।
হোয়াইট হাউস থেকে আশার আলো, কিন্তু মস্কো থেকে না-বলা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সপ্তাহের শুরুতে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি মস্কো ও কিয়েভকে শান্তির কাছাকাছি আনার প্রচেষ্টায় এক কূটনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছেন। তিনি জানিয়েছিলেন যে রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে সরাসরি আলোচনার আয়োজন শুরু করেছেন।
কিন্তু চার দিন পরেই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের সেই আশাবাদ অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। শুক্রবার রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেন যদি মস্কোর দীর্ঘদিনের কিছু দাবি মেনে না নেয়, তবে পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন না।
ট্রাম্পের জন্য এটি এক তীব্র ধাক্কা। তিনি এর আগে জোর দিয়ে বলছিলেন যে তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এক অনস্বীকার্য গতি তৈরি করেছে শান্তিচুক্তির দিকে, এমন একটি সংঘাত বন্ধ করতে যা তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, অফিসে প্রবেশের প্রথম দিনেই শেষ করবেন।
শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে সরাসরি বৈঠকের সময়সূচি ঠিক না হলে তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি ইঙ্গিত দেন যে রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা বা শুল্ক আরোপ করা হতে পারে—একটি হুমকি যা তিনি অতীতেও দিয়েছেন কিন্তু বাস্তবায়ন করেননি।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “আমরা দেখব তারা বৈঠকে বসে কিনা। দেখার মতো বিষয় হবে। যদি তারা বৈঠক না করে, তাহলে কেন বৈঠক হলো না? কারণ আমি তো তাদের বৈঠক করতে বলেছিলাম। তবে আমি জানব, দুই সপ্তাহের মধ্যে আমি কী করতে যাচ্ছি।”
ট্রাম্পের ঘোষিত ‘অগ্রগতি’ বাস্তবে হয়নি
সোমবার ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকের ব্যবস্থা করছেন। এটি এসেছিল জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে আলোচনার পরপরই এবং পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের ধারাবাহিকতায়। ট্রাম্প একই সঙ্গে ইউরোপীয় উদ্বেগও কিছুটা প্রশমিত করেছিলেন, যা তৈরি হয়েছিল তার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর—যেখানে তিনি রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনীয় ভূমি ছেড়ে দেওয়ার দাবির প্রতি কিছুটা ঝুঁকছেন বলে মনে হয়েছিল। সে সময় ইউরোপীয় নেতারাও সতর্ক আশাবাদ প্রকাশ করেছিলেন যে ট্রাম্প সত্যিই কিছুটা অগ্রগতি করেছেন। তিনি এমনকি তিনপক্ষীয় আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যাতে তিনিও যোগ দেবেন।
তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পুতিনের এই শান্তি প্রচেষ্টায় অঙ্গীকার নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। রুশ কর্মকর্তারা আলোচনার টেবিলে থাকা প্রস্তাবগুলোর মৌলিক দিক নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে শান্তিচুক্তির শর্ত নিয়ে বৈঠকে প্রস্তুত, তবে এর আগে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। আর সেটি দীর্ঘায়িত আলোচনার পথে ঠেলে দিতে পারে, কারণ দুই পক্ষ এখনো মৌলিক বিষয়গুলোতে একেবারেই ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে।
ল্যাভরভ এনবিসির রবিবারের অনুষ্ঠান “মিট দ্য প্রেস উইথ ক্রিস্টেন ওয়েলকার”-এ প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা নেই। পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে প্রস্তুত, যখন একটি শীর্ষ সম্মেলনের জন্য পূর্ণাঙ্গ এজেন্ডা প্রস্তুত হবে। আর এই মুহূর্তে সেই এজেন্ডা মোটেও প্রস্তুত নয়।”