ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস অবশিষ্ট ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে তিন দিনের মধ্যে মুক্তি দেবে এবং ধীরে ধীরে অস্ত্র সমর্পণ করবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল গাজার অধিকাংশ এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার, শত শত ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি, এবং বিস্তৃত মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন কার্যক্রমের অনুমতি দেবে।

PostImage

ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল


তেল আবিব │ বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির দাবিতে লাখো মানুষের বিক্ষোভের মধ্যে গাজা শহরে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যদিও শনিবারও অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শিফা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবু সালমিয়াহ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হামলার তীব্রতা অনেক কমেছে, তবে বিচ্ছিন্নভাবে বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শনিবার জানায়, দেশটির নেতৃত্ব যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে। একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েল বর্তমানে গাজায় প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছে এবং নতুন কোনো আক্রমণ শুরু করবে না, যদিও সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি।

এই ঘোষণা আসে কয়েক ঘণ্টা পর, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্দেশ দেন যে, হামাস তাঁর প্রস্তাবের কিছু অংশ গ্রহণ করার পর ইসরায়েল যেন বোমাবর্ষণ স্থগিত করে। ট্রাম্প বলেন, “হামাসকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে সব বাজি শেষ।” তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল “অস্থায়ীভাবে বোমাবর্ষণ বন্ধ করেছে।”

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস অবশিষ্ট ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে তিন দিনের মধ্যে মুক্তি দেবে এবং ধীরে ধীরে অস্ত্র সমর্পণ করবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল গাজার অধিকাংশ এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার, শত শত ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি, এবং বিস্তৃত মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন কার্যক্রমের অনুমতি দেবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন চাপের মুখে বিরলভাবে সাবাথের রাতে বিবৃতি দিয়ে জানান, তাঁর সরকার এখন ট্রাম্পের প্রস্তাব বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, আলোচক দল ইতোমধ্যে প্রস্তুত হচ্ছে এবং শিগগিরই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবে।

এদিকে, মিশরের রাজধানী কায়রোতে নতুন করে শান্তি আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, হামাস এবং আরব দেশগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। আলোচনায় ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের মানচিত্রফিলিস্তিনি বন্দিমুক্তি চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।


বিশ্বজুড়ে শান্তির দাবিতে বিক্ষোভের ঢল

ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়াসহ বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন।
লন্ডন, প্যারিস, রোম, বার্লিন ও নিউইয়র্কে বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নেয় সাধারণ মানুষ, মানবাধিকার সংগঠন ও ধর্মীয় নেতা-কর্মীরা।
তাদের মূল বার্তা — “Enough is enough — stop the war in Gaza.”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বৈশ্বিক চাপ এবং মার্কিন প্রশাসনের সক্রিয় মধ্যস্থতার কারণেই ইসরায়েলি আগ্রাসন কিছুটা শিথিল হয়েছে, যা যুদ্ধবিরতির পথে সম্ভাব্য প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে।

সিএসবি নিউজ-এর আরও খবর