এক রায়ে স্বস্তি, আরেক রায়ে দুশ্চিন্তা—শিনাওয়াত্রা পরিবারের রাজনৈতিক নাটক
বিতর্কিত এই ধনকুবের দীর্ঘদিন অবসরে থাকলেও এখনও থাই রাজনীতিতে বড় প্রভাবশালী শক্তি। ২০২৩ সালে দেশে ফেরার আগে তিনি টানা ১৫ বছর স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন। সরকারে কোনো আনুষ্ঠানিক পদ না থাকলেও তিনি সক্রিয় এবং ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয় যে, কন্যা পেতংটার্ন শিনাওয়াত্রার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ফেউ থাই পার্টির আড়ালে প্রকৃত নীতিনির্ধারক তিনিই। তবে দলটি বর্তমানে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে এবং প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘাত ও দুর্বল অর্থনীতির কারণে টিকে থাকার লড়াই করছে।
এক রায়ে স্বস্তি, আরেক রায়ে দুশ্চিন্তা—শিনাওয়াত্রা পরিবারের রাজনৈতিক নাটক
থাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন শিনাওয়াত্রা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা রাজদ্রোহ (রাজপরিবারকে অপমান) মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে।
শুক্রবার ব্যাংককের একটি আদালত প্রভাবশালী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে বলে তিনি ও তার আইনজীবী জানিয়েছেন। শিনাওয়াত্রা পরিবারের জন্য এটি ছিল একাধিক উচ্চ ঝুঁকির মামলার মধ্যে প্রথম রায়। ব্যাংককের ফৌজদারি আদালত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি। তবে তার আইনজীবী রয়টার্সকে আগেই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন, যদিও তিনি খারিজের কারণ জানাননি।
এই মামলা দায়ের করেছিল রাজতন্ত্রপন্থী সামরিক বাহিনী। অভিযোগ ছিল, ২০১৫ সালে নির্বাসনে থাকাকালীন একটি বিদেশি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৭৬ বছর বয়সী থাকসিন থাইল্যান্ডের কঠোর লেসে-মাজেস্তে (রাজপরিবারকে অপমানের) আইন লঙ্ঘন করেছেন। আদালতে হাজির হওয়ার সময় থাকসিন গলায় হলুদ টাই বেঁধেছিলেন, যা থাই রাজতন্ত্রের প্রতীকী রঙ। তিনি বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং একাধিকবার রাজাকে প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছেন। থাইল্যান্ডের সংবিধান অনুযায়ী রাজা "পূজ্য উপাসনার" আসনে অধিষ্ঠিত এবং রাজপন্থীদের কাছে রাজপ্রাসাদ অমর্যাদাহীন ও অক্ষত।
বিতর্কিত এই ধনকুবের দীর্ঘদিন অবসরে থাকলেও এখনও থাই রাজনীতিতে বড় প্রভাবশালী শক্তি। ২০২৩ সালে দেশে ফেরার আগে তিনি টানা ১৫ বছর স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন। সরকারে কোনো আনুষ্ঠানিক পদ না থাকলেও তিনি সক্রিয় এবং ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয় যে, কন্যা পেতংটার্ন শিনাওয়াত্রার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ফেউ থাই পার্টির আড়ালে প্রকৃত নীতিনির্ধারক তিনিই। তবে দলটি বর্তমানে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে এবং প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘাত ও দুর্বল অর্থনীতির কারণে টিকে থাকার লড়াই করছে।
থাকসিনের এই মামলা ছিল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দায়ের হওয়া ২৮০টিরও বেশি লেসে-মাজেস্তে মামলার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত। সমালোচক ও আন্দোলনকারীদের দাবি, এই আইনকে রক্ষণশীলরা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন ও বিরোধী কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করতে অপব্যবহার করছে। তবে রাজপন্থীদের মতে, সিংহাসন রক্ষায় এই আইন অপরিহার্য।
এই রায়টি এসেছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে। সে রায়ের কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন মাত্র এক বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা পেতংটার্ন। ৩৯ বছর বয়সী পেতংটার্নের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সাবেক কম্বোডিয়ান নেতা হুন সেনের সঙ্গে ফোনালাপে জড়িয়ে নৈতিকতার নিয়ম ভেঙেছেন। ওই টেলিফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে সাংবিধানিক আদালতে মামলা হয়। যদিও তিনি দাবি করেছেন, তা ছিল কেবল এক কূটনৈতিক সঙ্কট প্রশমনের প্রচেষ্টা, যা পরবর্তীতে পাঁচ দিনের সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নেয়।