“এটি আমার জীবনের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান”— প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প
রাজা চার্লস তাঁর ভাষণে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে নতুন করে দৃঢ় করার কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমাদের বন্ধুত্বের অবিচল বিশ্বাস এবং স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি যৌথ অঙ্গীকার আজও সমান দৃঢ়।”
“এটি আমার জীবনের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান”— প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প
লন্ডন, সেপ্টেম্বর ২০২৫ — মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাজ্যে তাঁর দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফরের প্রথম দিনকে জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। “এটি আমার জীবনের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান,” স্টেট ব্যাংকুয়েটে ভাষণে বলেন প্রেসিডেন্ট।
প্রথম দিন ছিল রাজকীয় আয়োজনের এক অনন্য প্রদর্শনী — উইন্ডসরে রাজা ও রাণীর আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা, ঘোড়ার গাড়ির শোভাযাত্রা, রেড অ্যারোজ ফ্লাইপাস্ট এবং স্টেট ব্যাংকুয়েট। ১৬০ জন অতিথির সামনে ভাষণে ট্রাম্প দুই দেশের সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, “স্পেশাল শব্দটিও এই সম্পর্কের জন্য যথেষ্ট নয়।”
রাজা চার্লস তাঁর ভাষণে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে নতুন করে দৃঢ় করার কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমাদের বন্ধুত্বের অবিচল বিশ্বাস এবং স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি যৌথ অঙ্গীকার আজও সমান দৃঢ়।”
দিনের শুরুতে ট্রাম্প প্রয়াত রানী এলিজাবেথ দ্বিতীয়ের সমাধিতে ব্যক্তিগতভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান — যা ছিল ক্যামেরামুক্ত এক আবেগঘন মুহূর্ত।
প্রেসিডেন্ট এবং রাজা এরপর পাশাপাশি বসেন এমন এক ভোজ টেবিলে যা প্রস্তুত করতে পুরো এক সপ্তাহ সময় লেগেছিল। টেবিলে রয়্যাল পরিবারের সদস্য এবং মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিনের সূচি
আজকের কর্মসূচি শুরু হবে উইন্ডসর ক্যাসেলে আনুষ্ঠানিক বিদায়ের মাধ্যমে। এরপর প্রেসিডেন্ট চেকার্সে যাবেন যেখানে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারের সঙ্গে বৈঠক করবেন, একসঙ্গে স্যার উইনস্টন চার্চিল আর্কাইভ পরিদর্শন করবেন এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। পরে তারা চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভসের সঙ্গে ব্যবসায়িক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন এবং দিনশেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন। ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প রয়্যাল লাইব্রেরি ও কুইন মেরির ডলস হাউস পরিদর্শন করবেন।
রাজনীতি ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ
আজকের সংবাদ সম্মেলনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কারণ বেশ কয়েকটি বিষয়ে দুই নেতা ভিন্নমত পোষণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে —
-
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি: যুক্তরাজ্য আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে, যা হোয়াইট হাউস ভুল পদক্ষেপ হিসেবে মনে করছে।
-
ইউক্রেন ইস্যু: যুক্তরাজ্যের অবিচল কিয়েভ সমর্থন, যা তারা পশ্চিমা মূল্যবোধ রক্ষার যুদ্ধ হিসেবে দেখে। বিপরীতে, ট্রাম্পের জেলেনস্কিকে দেওয়া সমর্থন অনিশ্চিত এবং তার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক সমালোচিত।
-
জেফরি এপস্টিন প্রসঙ্গ: দোষী সাব্যস্ত এই যৌন অপরাধীর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, প্রিন্স অ্যান্ড্রু এবং সম্প্রতি পদত্যাগ করা যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত লর্ড ম্যান্ডেলসনের সম্পর্ক রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে।
সবশেষে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে ওয়াশিংটন ডিসি ফিরে যাবেন, সফরের রাজনৈতিক অধ্যায় শেষ করে।