ভারতকে চ্যালেঞ্জ করাই কাল হলো, ক্ষমতা হারানোর কারণ জানালেন কেপি শর্মা অলি

কেপি শর্মা অলির এই বিস্ফোরক মন্তব্য ও সীমান্ত সংক্রান্ত কঠোর অবস্থান নেপাল-ভারত সম্পর্ককে এক নতুন বিতর্কের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তার এই অভিযোগ আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেবে।

PostImage

ভারতকে চ্যালেঞ্জ করাই কাল হলো, ক্ষমতা হারানোর কারণ জানালেন কেপি শর্মা অলি


নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি অভিযোগ করেছেন, ভারতের সঙ্গে স্পর্শকাতর সীমান্ত এবং সাংস্কৃতিক ইস্যুতে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানানোর কারণেই তাকে ক্ষমতা হারাতে হয়েছে। সম্প্রতি দলের মহাসচিবের কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি এই বিস্ফোরক দাবি করেন, যা নেপাল-ভারত সম্পর্ককে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।

গুঞ্জন ছিল, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কেপি শর্মা অলি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে তিনি নেপালেই সামরিক বাহিনীর সুরক্ষায় আছেন এবং সেখান থেকেই এক চিঠির মাধ্যমে তার ক্ষমতাচ্যুতির জন্য সরাসরি ভারতকে দায়ী করেছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, "যদি আমি লিপুলেখ অঞ্চল নিয়ে প্রশ্ন না তুলতাম এবং অযোধ্যা ও দেবতা রামকে নিয়ে কথা না বলতাম, তাহলে হয়তো আমি আজও ক্ষমতায় থাকতাম।" তার মতে, ভগবান রামের জন্মস্থান ভারতের অযোধ্যায়—এই ঐতিহাসিক দাবির বিরোধিতা করার কারণেই তাকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করা হয়েছে।

ভারত ও নেপালের মধ্যে কালাপানি-লিপুলেখ-লিম্পিয়াধুড়া অঞ্চল নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তি অনুযায়ী কালী নদীকে দুই দেশের সীমান্ত ধরা হলেও নদীর উৎস নিয়ে দু'দেশের অবস্থান ভিন্ন। নেপালের দাবি, নদীর উৎস লিম্পিয়াধুড়া, যা অনুযায়ী এই সম্পূর্ণ ভূখণ্ড নেপালের। অন্যদিকে, ভারতের দাবি, এটি তাদের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অংশ। কেপি শর্মা অলির সরকার এই বিতর্কিত অঞ্চলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে নেপালের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে, যা দুই দেশের সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনা তৈরি করে।

২০২০ সালে কেপি শর্মা অলি এক মন্তব্যে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। তিনি দাবি করেন, দেবতা রামের জন্ম ভারতে নয়, বরং নেপালের বীরগঞ্জের নিকটবর্তী অঞ্চলে হয়েছিল। তিনি বলেন, "আসল অযোধ্যা নেপালে, ভারত একটি ভুয়া অযোধ্যা তৈরি করেছে।" প্রাচীনকালে দূরবর্তী অঞ্চলে বিয়ের প্রথা না থাকার যুক্তি দেখিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ভারতের রাম কীভাবে নেপালের জনকপুরের সীতাকে বিয়ে করতে পারেন। তার এই মন্তব্যের পর ভারতে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছিল।

কেপি শর্মা অলির এই বিস্ফোরক মন্তব্য ও সীমান্ত সংক্রান্ত কঠোর অবস্থান নেপাল-ভারত সম্পর্ককে এক নতুন বিতর্কের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তার এই অভিযোগ আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেবে।

সিএসবি নিউজ-এর আরও খবর