জাতীয় পুরস্কার জয়ের পর জীবনের লড়াইয়ের গল্প শেয়ার করলেন আশিস বিদ্যার্থী
বিদ্যার্থীর প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র ছিল সর্দার, যেখানে তিনি এভি পি মেননের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তবে তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল দ্রোহকাল, যার জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
জাতীয় পুরস্কার জয়ের পর জীবনের লড়াইয়ের গল্প শেয়ার করলেন আশিস বিদ্যার্থী
বলিউডের বহুমুখী অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। হিন্দি, তেলেগু, তামিল, কন্নড়, মালয়ালম, বাংলা, মারাঠি, ওড়িয়া এবং ইংরেজি—ভারতের প্রায় সব প্রধান চলচ্চিত্র শিল্পেই তিনি নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। খলঅভিনেতা হিসেবেই সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পেলেও, তার অভিনয় দক্ষতা তাকে বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে দিয়েছে।
বিদ্যার্থীর প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র ছিল সর্দার, যেখানে তিনি এভি পি মেননের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তবে তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল দ্রোহকাল, যার জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
বর্তমানে তিনি শুধু অভিনেতা নন, একজন মোটিভেশনাল স্পিকার এবং জনপ্রিয় ফুড ভ্লগার হিসেবেও পরিচিত। সম্প্রতি ‘দ্য ট্রেইটর্স’ রিয়েলিটি শোতেও তাকে প্রতিযোগী হিসেবে দেখা গেছে। এক সাক্ষাৎকারে আশিস বিদ্যার্থী জীবনের কঠিন সময় ও সংগ্রামের অভিজ্ঞতা খোলামেলা ভাবে তুলে ধরেন।
তিনি জানান, জাতীয় পুরস্কারের মতো সম্মানজনক স্বীকৃতি পাওয়ার পরও জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে তাকে তীব্র আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। পরিবারের দায়িত্ব বহন করতে গিয়ে তিনি বহুবার যে কোনো ধরনের প্রস্তাবিত চরিত্রে অভিনয় করতে বাধ্য হয়েছিলেন, এমনকি বি-গ্রেড সিনেমাতেও।
দ্রোহকাল চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর পরিচালক গোবিন্দ নিহালানি তাকে উদযাপনের জন্য একটি পার্টির আয়োজন করতে বলেন। কিন্তু সেই সময় নিজের বাড়িভাড়া দিতেই হিমশিম খাওয়া অভিনেতার পক্ষে বিলাসবহুল রেস্তোরাঁয় পার্টি দেওয়া ছিল একেবারেই অসম্ভব।
আশিস বিদ্যার্থী বলেন, বন্ধুর অনুপ্রেরণায় অবশেষে তিনি দিল্লির খ্যাতনামা "মেইনল্যান্ড চায়না" রেস্তোরাঁয় পার্টি আয়োজন করেন, যদিও পুরো সন্ধ্যা কাটিয়েছিলেন দুশ্চিন্তায়। তিনি স্বীকার করেন, নিজের সামর্থ্যের বাইরে খরচ হওয়ার আশঙ্কায় সেদিন কেবল একটি লেবুর পানি নিয়েই দাঁড়িয়ে ছিলেন, কারণ কোনো বাড়তি পানীয় অর্ডার দিলে বিল বেড়ে যাবে এই ভয়ে।
তিনি স্মৃতিচারণ করে আরও জানান, “সেদিন যারা মদ্যপান করতেন না তারাও অ্যালকোহল চাইছিলেন, আর নিরামিষভোজীরাও মাংস খেতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত আমি ভয়ে পরিচালক গোবিন্দ নিহালানিকে জিজ্ঞেস করি— যদি আমি বিল দিতে না পারি, তবে কি আমাকে থালা বাসন মাজতে হবে?”
এ সময় পরিচালক নিহালানি আশ্বস্ত করেন যে তিনি খরচ মিটিয়ে দেবেন। সেই সহৃদয় আচরণই আশিস বিদ্যার্থীকে শেষ পর্যন্ত উদযাপনের আনন্দ উপভোগ করতে সাহায্য করেছিল।
জাতীয় পুরস্কার জয়ের পর এমন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে আশিস বিদ্যার্থী জানান, জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত তাকে শিখিয়েছে সাফল্যের আড়ালে থাকা সংগ্রামের মূল্য। বর্তমানে তিনি সেই অভিজ্ঞতাগুলো মোটিভেশনাল বক্তৃতা ও জীবনের গল্পের মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রেরণা হিসেবে শেয়ার করছেন।