কলমের এক আঁচড়ে শিশুদের রক্ষা করতে পারেন পুতিন’ — মেলানিয়া ট্রাম্প, তবে ফিলিস্তিনি শিশুদের বেদনা কি উপেক্ষিত?

মেলানিয়া ট্রাম্পের চিঠি নিঃসন্দেহে মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—কেন ইউক্রেন যুদ্ধে নিখোঁজ বা বিপন্ন শিশুদের কথা হোয়াইট হাউস এত গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরে, অথচ মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের জন্য একই কণ্ঠস্বর শোনা যায় না?

PostImage

কলমের এক আঁচড়ে শিশুদের রক্ষা করতে পারেন পুতিন’ — মেলানিয়া ট্রাম্প, তবে ফিলিস্তিনি শিশুদের বেদনা কি উপেক্ষিত?


বিশ্বব্যাপী শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার আহ্বান জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উদ্দেশ্য করে একটি “শান্তিপত্র” লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। ফক্স নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট আলাস্কায় অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকের সময় চিঠিটি পড়েন রুশ প্রেসিডেন্ট।

মেলানিয়া তার চিঠিতে লেখেন:
“এই শিশুদের নিষ্পাপত্ব রক্ষার মাধ্যমে আপনি শুধু রাশিয়াকেই সেবা করবেন না, বরং সমগ্র মানবজাতিকেই সেবা করবেন… আপনি, মি. পুতিন, আজ কলমের এক আঁচড়ে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম।”

তিনি আরও বলেন:
“অভিভাবক হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো পরবর্তী প্রজন্মের আশা লালন করা। নেতা হিসেবে আমাদের শিশুদের প্রতি দায়িত্ব কেবল কিছু মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যের সীমায় থেমে থাকে না। আমাদের মর্যাদায় ভরা এক পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে—যাতে প্রতিটি প্রাণ শান্তি নিয়ে ঘুম থেকে জাগতে পারে এবং ভবিষ্যৎ নিজেই সুরক্ষিত থাকে।”

মেলানিয়া ট্রাম্পের এই মানবিক আবেদন আন্তর্জাতিক পরিসরে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে একই সময়ে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে নিহত হাজারো ফিলিস্তিনি শিশুর করুণ বাস্তবতা প্রশ্ন তুলছে—মানবতার বেদনাবোধ কি নির্বাচিত হয়ে যাচ্ছে?

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘাতে ইতোমধ্যেই হাজারো শিশু প্রাণ হারিয়েছে, আরও অনেকে আহত ও গৃহহীন হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া অসংখ্য শিশু প্রতিদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্ত ঝরছে, তাদের আর্তনাদও একইভাবে বিশ্বনেতাদের কর্ণগোচর হওয়া উচিত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মেলানিয়া ট্রাম্পের চিঠি নিঃসন্দেহে মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—কেন ইউক্রেন যুদ্ধে নিখোঁজ বা বিপন্ন শিশুদের কথা হোয়াইট হাউস এত গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরে, অথচ মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের জন্য একই কণ্ঠস্বর শোনা যায় না?

ফিলিস্তিনি শিশুরাও যে নিষ্পাপত্ব নিয়ে জন্ম নেয়, তাদের হাসিও যে ভৌগোলিক সীমানার ঊর্ধ্বে—এই সত্যটি কি উপেক্ষিত হবে? মানবাধিকার কর্মীদের মতে, শিশুদের বাঁচানো নিয়ে যে কোনো শান্তিপত্রই তখনই অর্থবহ, যখন তা হবে সর্বজনীন, পক্ষপাতহীন এবং সর্বত্র সমানভাবে প্রযোজ্য।