ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দিয়ে,সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির পরিচালনা করে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করেছে
২০২৫ সালের ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান কীভাবে ভারতীয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সংঘটিত নৃশংস হামলার দায় থেকে “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামের পাকিস্তান-পৃষ্ঠপোষক সন্ত্রাসী সংগঠনকে রক্ষা করেছিল।
ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দিয়ে,সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির পরিচালনা করে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করেছে
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের উসকানিমূলক ভাষণের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত শুক্রবার কড়া জবাব দিয়েছে। ভারতীয় কূটনীতিক পেতাল গাহলট জাতিসংঘে বলেন, “ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দিয়ে,সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির পরিচালনা করে সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করেছে, -পাকিস্তান ” এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের কাশ্মীর ও ইন্দাস পানি চুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের পুরোনো অবস্থান পুনরাবৃত্তি করে শরিফের বক্তব্যকে “হাস্যকর নাটক” বলেও আখ্যা দিয়েছেন । শাহবাজ শরিফের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারত তার “প্রত্যুত্তরের অধিকার” প্রয়োগ করে পাকিস্তানের সমালোচনায় মুখর হয়। জাতিসংঘে ভারতীয় প্রতিনিধি পেতাল গাহলট বলেন — মাননীয় সভাপতি, আজ সকালে এই পরিষদ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে হাস্যকর নাট্যাভিনয় প্রত্যক্ষ করেছে, যিনি আবারও সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করেছেন — যা তাদের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দু। তবে কোনো নাটক বা মিথ্যার পাহাড়ই সত্যকে ঢেকে রাখতে পারবে না।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৫ সালের ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান কীভাবে ভারতীয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সংঘটিত নৃশংস হামলার দায় থেকে “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামের পাকিস্তান-পৃষ্ঠপোষক সন্ত্রাসী সংগঠনকে রক্ষা করেছিল।
পেতাল গাহলট আরও বলেন, — যে দেশ বহুদিন ধরে সন্ত্রাসবাদ রপ্তানি ও ব্যবহার করার ঐতিহ্যে ডুবে আছে, সেই দেশই আবার সবচেয়ে উদ্ভট বয়ান ছড়াতে লজ্জা পায় না। মনে করুন, এই পাকিস্তানই ওসামা বিন লাদেনকে এক দশক ধরে আশ্রয় দিয়েছিল, অথচ নিজেদেরকে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে অংশীদার হিসেবে উপস্থাপন করছিল। তাদের মন্ত্রীরা সম্প্রতি স্বীকার করেছেন যে তারা দশকের পর দশক ধরে সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির পরিচালনা করছে। সুতরাং আবারও এই দ্বিচারিতা অব্যাহত থাকায় অবাক হওয়ার কিছু নেই, এবার তা তাদের প্রধানমন্ত্রীর পর্যায়ে পৌঁছেছে।”
ভারত অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান শুধু সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনই করে না, বরং সেটিকে রাষ্ট্রীয় নীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে সেই কর্মকাণ্ড ঢাকার চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘে শাহবাজ শরিফ তাঁর বক্তব্যে কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করে বলেন -আমি কাশ্মীরি জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমি তাদের পাশে আছি, পাকিস্তান তাদের পাশে আছে, এবং একদিন ভারতের কাশ্মীরে অত্যাচার বন্ধ হবে।”
ভারত এই মন্তব্যকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে জানায়, শরিফ কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে কেবল আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা থেকে সরানোর চেষ্টা করেছেন।
শরিফ ভারতের বিরুদ্ধে ১৯৬০ সালের ইন্দাস পানি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগও তোলেন। তবে ভারত স্পষ্টভাবে জানায়, সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চুক্তি স্থগিতই থাকবে।
২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে সংঘটিত ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ইন্দাস পানি চুক্তিতে অংশগ্রহণ স্থগিত করে। নয়াদিল্লি জানায়, -“রক্ত ও পানি একসাথে প্রবাহিত হতে পারে না।”
ভারতের দাবি, হামলার পেছনে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা ছিল এবং ইসলামাবাদ এখনও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলিকে সমর্থন দিচ্ছে। ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তান যাচাইযোগ্য পদক্ষেপ নিলে তবেই চুক্তি পুনর্বহাল করা হবে।
জাতিসংঘের মঞ্চে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বক্তব্যকে ভারত “রাজনৈতিক নাটক” এবং “সন্ত্রাসবাদের মহিমান্বিত প্রচেষ্টা” হিসেবে বর্ণনা করেছে। নয়াদিল্লি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, সীমান্তপারের সন্ত্রাস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাশ্মীর বা পানিচুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের কোনো দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।